সালেহ্ বিপ্লব: [২] বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের উন্নয়নে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এনডিবি) কাছে এ সহায়তা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। রোববার অনুষ্ঠিত মতবিনিময়ে এ লক্ষ্যে একটি নতুন আর্থিক প্রকল্প উদ্ভাবনের জন্য এনডিবি’র প্রতি আহ্বাান জানান তিনি। 

[৩] অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিশীল প্রবৃদ্ধির গতিপথের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে অপ্রচলিত উপায়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত; বিশেষত বেসরকারি খাত সহজীকরণ, নীতি সহায়তা ও জলবায়ু খাতে নমনীয় অর্থায়ন) মিশ্রিত অর্থায়নসহ উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রয়োজন।

[৪] ইআরডি জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশে মাল্টি-কারেন্সি অপারেশন এক্সপ্লোর করার প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হয়। এছাড়া  বৈঠকে  শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ গুরুত্ব পায় পরিবহ, পরিচ্ছন্ন শক্তি, বিদ্যুৎ খাতে দক্ষতা, পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা এবং পর্যটন খাতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। 

[৫] চলমান সফরে যেসব প্রকল্পে এনডিবি’র অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা হবে, সেগুলো হচ্ছেÑ বিশেষভাবে শহরের নির্বাচিত এলাকায় পানি সরবরাহের একটি নতুন নেটওয়ার্ক স্থাপন এবং ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে পুরনো গ্যাস নেটওয়ার্ক প্রতিস্থাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। 

[৬] প্রারম্ভিক আলোচনায় এনডিবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চীফ অপারেটিং অফিসার ভøাদিমির কাজবেকভ অর্থমন্ত্রীকে তার সাম্প্রতিক নিয়োগের জন্য অভিনন্দন জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন সরকারের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এ সফরের লক্ষ্য হচ্ছেÑ বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন উদ্যোগকে সমর্থন করার জন্য সম্পর্ক জোরদার করা এবং সম্ভাব্য সহযোগিতা অন্বেষণ করা। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করার আশ্বাস দেন এবং টেকসই উন্নয়ন উদ্যোগে সহায়তার জন্য সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন।

[৭] রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরস্থ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) কার্যালয়ে বাংলাদেশ সফররত সাত সদস্য বিশিষ্ট এনডিবি’র প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন অর্থমন্ত্রী। এনডিবি’র প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চীফ অপারেটিং অফিসার ভøাদিমির কাজবেকভ।

সালেহ্ বিপ্লব: [২] দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকানোর পর খুঁজতে সচিবালয়ে রোববার বিকেলে চার মন্ত্রীর জরুরি বৈঠকের পর এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। শিগগিরই এর সুফল মিলবে। 

[৩] খোলা বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর কৌশল নির্ধারণ, মজুতদার ও সিন্ডিকেটের কারসাজি রোধ এবং প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির মাধ্যমে দ্রুত সময়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের উপায় বের করতে এই আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক বিকেলে অর্থমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। 

[৪] অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, এনবিআর চেয়ারম্যানসহ রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা।

[৫] সভায় বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন ও আমদানি পরিস্থিতির সঙ্গে চাহিদা বিশ্লেষণ করে ঘাটতি চিহ্নিত করা হয়। রমজানের আগে ঘাটতি মেটাতে পণ্য আমদানি সহজ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

[৬] পাশাপাশি ঘোষিত মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উপায় নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়। চাল, আটা, তেল, চিনি, আলু, পেঁয়াজ, গরুর মাংস, ডিম ও পোলট্রি পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করা কারসাজির হোতাদের চিহ্নিত করার কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়। একই সঙ্গে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থার কঠোর দৃষ্টান্ত স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়।

[৭] এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আলাপচারিতায় এক প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমকে জানান, এতদিন বাজার ব্যবস্থাপনার বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এককভাবে সামলেছে। তবে এখন থেকে আমরা আর একা নই। আমাদের সঙ্গে অর্থ, কৃষি, মৎস্য, প্রাণী, শিল্প ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর-তো রয়েছেই। আগামীতে আমরা তাদের সবার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবো। বাজারে পণ্য সরবরাহ বাড়াতে এ সমন্বয়েই সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হবে।